নিজস্ব প্রতিনিধি:
বর্তমানে যক্ষ্মা রোগীর সব চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। এক নাগালে ২ সপ্তাহের বেশি সময় কাশি থাকা যক্ষ্মা রোগের প্রধান লক্ষণ। কিন্তু যক্ষ্মা রোগীরা পরিপূর্ণ চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন না। তারা একটু সুস্থ হলেই চিকিৎসা নেওয়া বন্ধ করে দেন। এমনটি করা যাবেনা। সম্পূর্ণ চিকিৎসা তাকে গ্রহণ করতে হবে। বর্তমানে যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ে কফ পরীক্ষা, বুকের এক্স-রে, রক্ত পরীক্ষা এবং ঔষধ বিতরণ সহ বিনামূল্যে সব চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তা প্রচার এবং সচেতনতায় সাংবাদিকদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
৪ নভেম্বর (বুধবার) খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের হলরুমে সাংবাদিকদের নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতি (নাটাব) খাগড়াছড়ি জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জন ডা. নুপুর কান্তি দাশ এসব কথা বলেন।
সভায় ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মিটন চাকমা বলেন, যক্ষ্মা রোগীর কফ, হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে জীবাণু বের হয়ে বাতাসে মিশে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে তা সুস্থ ব্যক্তির ফুসফুসে প্রবেশ করে এবং সুস্থ ব্যাক্তিকে আক্রান্ত করে। ২ সপ্তাহের বেশি কাশি যক্ষ্মার প্রধান লক্ষণ। বর্তমানে প্রত্যেক জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলায় সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র, নাটাব যক্ষ্মা কর্মসূচির উপর কাজ করছে। নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যক্ষ্মার ঔষধ বিনামুল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। কাজেই তিন সপ্তাহের বেশি কাশি থাকলে যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে যক্ষ্মা রোগ সনাক্তের জন্য নিকট স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
অরন্য বার্তা পত্রিকার সম্পাদক চৌধুরী আতাউর রহমান রানা বলেন, যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসা সর্ম্পকে সচেতন করে তোলার ব্যাপারে নাটাবের পাশাপাশি যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের সুস্থ করে তোলার ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংবাদিকরা কাজ করছে। সভা, সমাবেশ, সেমিনার, র্যালী এবং রোগীদের সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ তৈরি করে তা নিশ্চিত করতে হবে। সবারই উচিত নতুন নতুন যক্ষ্মা রোগী খুঁজে বের করে তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবায় নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানো। তা হলেই আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ ও যক্ষ্মামুক্ত করা সম্ভব। তাই সবাই মিলে দেশকে ভালোবাসি, সরকারী কাজে এগিয়ে আসি, তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে।
নাটাবের সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি জীতেন বড়ুয়া বলেন, একজন যক্ষ্মা রোগী নতুন আরও ১০০ জন যক্ষ্মা রোগীকে আক্রান্ত করে। অতএব ভাসা ভাসা চিকিৎসা করলে সে যক্ষ্মা রোগী ভাল হবে না। সঠিক মাত্রায়, পরিমান মত নিয়মিত ঔষধ সেবন করতে হবে। সমাজে যদি যক্ষ্মা রোগের ব্যাপারে সচেতনতা না থাকে তাহলে দিনে দিনে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকবে। সচেতন নাগরিকরা যদি যক্ষ্মা রোগ ও করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারে তা হলে দেশে যক্ষ্মা ও করোনা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে পারবে।
এসময় খাগড়াছড়ি নাটাবের সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি জীতেন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের মুহাম্মাদ, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ নুরুল আজম, টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম প্রফুল্লসহ জেলায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে যক্ষ্মা রোগের কারণ ইতিহাস, প্রতিরোধের উপায়, চিকিৎসা ও সচেতনতা মূলক বিভিন্ন বিষয়ের উত্তর প্রদান করেন প্রধান ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ। এর ধারাবাহিকতায় শিক্ষক, আইনজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, ইমাম, কার্বারী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ সমাজের বিভিন্ন পেশাজীবীদের মধ্যে জনসচেনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে নাটাব। তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান নাটাবের নেতৃবৃন্দ।